মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Kaushik Roy | ২৫ মে ২০২৪ ২১ : ৫১Kaushik Roy
বিভাস ভট্টাচার্য
আশঙ্কাটা ছিল। সেটাই সত্যি হল। রক্তপাতের আশঙ্কা। রবিবার রেমাল কোথায় কখন আছড়ে পড়বে সেই আলোচনাকে ছাপিয়ে গেল সাত ওভারের খেলায় শেষ ওভারের পাঁচ নম্বর বলকে ঘিরে দু'দলের সমর্থকদের মধ্যে গোলমাল। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। মাথা ফাটাফাটি, নিরাপত্তারক্ষীর অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা, রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ। সব কিছুই রাজ্যবাসী সপ্তম দফার এই লোকসভা নির্বাচনে ষষ্ঠ পর্বের দিন সাক্ষী থাকলেন। অথচ খেলার আম্পায়ার বা নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি বারে বারে ভোটের আগে এসে ঘুরে গেছেন রাজ্যে। দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে। ভোটারদের আশ্বস্ত করতে তাঁরা বারবার শুনিয়েছেন নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা। কিন্তু সপ্তাহের শেষদিন শনিবার বঙ্গবাসী দেখলেন নির্বাচন আছে নির্বাচনেই। এই দফার নির্বাচনে যে গোলমাল হতে পারে তার আভাস আগেই পেয়েছিল কমিশন। বুধবার নন্দীগ্রামে খুন হন রথিবালা আড়ি নামে এক বিজেপি কর্মী। অন্যদিকে ভোটের আগের দিন শুক্রবার মহিষাদলে খুন হন এক শেখ মইবুল নামে এক তৃণমূল কর্মী। জায়গায় জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ বা এরিয়া ডমিনেশন হলেও তা যে কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি সেটা শনিবারের ঘটনাপ্রবাহ একেবারেই কিন্তু প্রমাণ করে দিল।
ভয়মুক্ত ও রক্তপাতহীন নির্বাচনের কথা প্রচার করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু কথায় এবং বাস্তবে কিন্তু একটা বড়সড় তফাৎ থেকে যায়। যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভরসায় ভোটাররা বুকে বল পান শনিবার ভগবানপুরে সেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের থেকে অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগও যেমন উঠেছে তেমনি গড়বেতায় বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর লোকজনকে ইট ছুঁড়ে খেদিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়াও গোলমালের ঘটনা ঘটেছে একাধিক জায়গায়। কেন রাজ্যে রক্তপাতহীন নির্বাচন হতে পারে না?
রাজ্য বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় দায়ী করেছেন রাজ্য সরকারকে। তাঁর কথায়, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে রাজ্য প্রশাসনের সদিচ্ছার ওপর যে কোনও বিষয় অনেকটাই নির্ভর করে। ফলে শনিবার যা যা ঘটেছে তা ঘটেছে রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও কেন আটকানো গেল না হিংসা? জগন্নাথের অভিযোগ, ভুলভাবে রাজ্য পুলিশ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পরিচালনা করেছে। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, গোটা বিষয়টিই তো এখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তা সে পুলিশ হোক বা কেন্দ্রীয় বাহিনীই হোক। তারাই তো গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছে। একইসঙ্গে অরূপের কথায়, এবারের নির্বাচন তুলনায় অনেক শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এর পাশাপাশি আরও একটি বিষয় আছে সেটা হল যেখানেই রাজনৈতিক সচেতনতা বেশি সেখানেই এই ধরনের রাজনৈতিক উত্তেজনাটা থাকে। এই ধরনের ট্রেন্ড পশ্চিমবঙ্গ বা ত্রিপুরা ও কেরালাতেও আছে। দুইপক্ষ পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে আঙুল তোলে। আর শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কথাটা শোনায় 'সোনার পাথরবাটি'র মত।